NL24 News
১৮ অক্টোবর, ২০২৫, 5:33 PM
এসএসসি-১৯৯২ ব্যাচের মিলনমেলা ও সাংস্কৃতিক উৎসব
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসি অভিটোরিয়াম ও ক্যাফেটেরিয়াতে ৬৪ জেলা থেকে আগত সহপাঠী বন্ধু বান্ধবীদের উপস্থিতির মধ্য দিয়ে উদযাপিত হলো প্রগতিশীল গ্রুপের এসএসসি ১৯৯২ ব্যাচের এক আনন্দঘণ মিলনমেলা।
শুক্রবার ১৭ অক্টোবর বন্ধুত্ব, প্রীতি আর ভালোবাসার রঙে রাঙ্গিয়ে প্রায় তিন দশক অর্থাৎ ৩৩ বছর পর একত্রিত হয়ে পিছনে ফেলে আসা স্মৃতিগুলোকে তারুণ্য মনোভাবের মাধ্যমে প্রকাশিত করার লক্ষ্যে, আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে দিয়ে পালিত হলো এশিয়া মহাদেশের অক্সফোর্ড খ্যাত বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ঐতিহ্যবাহী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটোরিয়াম ও ক্যাফেটেরিয়াতে এই মেলবন্ধন।
সময় বদলায়, মানুষ বদলায় — কিন্তু কিছু সম্পর্ক থাকে চিরন্তন। সেই সম্পর্কের নাম বন্ধুত্ব। প্রগতিশীল এসএসসি-১৯৯২ ব্যাচ ঠিক এমনই এক বন্ধনকে আবার নতুন করে ছুঁয়ে দিতে প্রথম বার্ষিক মিলনমেলা ও সাংস্কৃতিক উৎসব ২০২৫-এর মাধ্যমে।
বাংলাদেশের ৬৪ জেলা হতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ৩৩ বছর আগে যারা ১৯৯২ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল সকলের স্মৃতি নতুন ভাবে তারুণ্য ভরা মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ করায় ছিল মূল লক্ষ্য। সহপাঠী বান্ধবীদের অনেকেই গ্রামেগঞ্জে শহরে জন্মসূত্রে অথবা সূত্রে বি়ভিন্ন জেলার সহপাঠি বন্ধুরা সকল সময় একসাথে হওয়ার সুযোগ না থাকলেও মনে হয়েছিল আমরা অনেক কাছের, এক কথায় সকলেই আমরা বাংলাদেশের নাগরিক।
আমাদের কর্মজীবন বাস্তব জীবন যাই হোক মনের ভিতরে আমরা একই মানসিকতা, সমতা, বিপদ-আপদে পরস্পর পরস্পরের প্রতি সহানুভবতা, সহমর্মিতা এবং ভবিষ্যৎ আমাদের শক্তির উৎসই বন্ধু বান্ধবীরাই। এই দৃষ্টিকোণ থেকেই সকলে উপস্থিত হয়েছিল এই প্রগতিশীলের প্লাটফর্মে। প্রগতিশীল শব্দ ঠিকই কিন্তু এই শব্দটি সকলকেই একত্রিত করার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল শুক্রবার সকাল ১১ টা হতে রাত ৮ টা পর্যন্ত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণকেন্দ্র টি.এস.সি অডিটোরিয়াম ও ক্যাফেটেরিয়া ভরে উঠেঠিল হাসি,আনন্দভরা আড্ডা আর পুর্বের স্মৃতি মনে করে তারুণ্যকে অবলোকন করা। সামান্য সময় হলেও তারুণ্য ভরা উন্মাদনা, স্মৃতিকথা, আলোচনা পর্ব এবং সংগীতের মধ্যে দিয়ে মোঃ ইমাম হোসেন ও নাজনিন আক্তারের উপস্থাপনার মাধ্যমে সকাল ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রাণবন্ত আয়োজনের মধ্য দিয়া।
মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের পক্ষ থেকে পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করেন মোঃ কামরুজ্জামান ও হিন্দু ধর্মাবলম্বীের পক্ষ থেকে মনোজ কুমার কীর্ত্তনিয়া গীতা পাঠ করেন। উল্লেখ্য বন্ধুদেরকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয় অনুষ্ঠানস্থলে। অনুষ্ঠান স্থলে সকল বন্ধু বান্ধবীদের বর্তমান বয়সকে ভুলে পূর্বের স্মৃতিচারণ করতে, গল্প এবং আড্ডার মধ্যে মশগুল থাকতে দেখা যায়।
এর পরবর্তীতে সহপাঠীদের সম্মিলিত পরিবেশনায় জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রগতিশীল ৯২ ব্যাচের আহবায়ক মোঃজাহাঙ্গীর আলম জুলহাস,এছাড়া বক্তব্য প্রদান করেন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মেজর (অবঃ) মোঃ তোজাম্মেল হক তোতা মিয়া, রিয়াজুল হাসান, অনুষ্ঠানে সহযোগিতায় ছিলেন মোঃ মামুনুর রহমান সরকার,এনায়েতুল্লাহ খোকন,হারুনর রশিদ, মেজর (অবঃ) মোঃ তোজ্জামেল হক তোতামিয়া, ইমাম হোসেন,সাইফুল ইসলাম,জাহাঙ্গীর আলম জুলহাস,শাহ আলম, নাসরিন আলমসহ বন্ধুরা।
অনুষ্ঠানে বান্ধবী শাহিন আক্তারের ভূমিকা ছিল ব্যতিক্রম ধর্মী এবং সকলের কাছে প্রশংসনীয়। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে সহপাঠী বন্ধু বান্ধবীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, গান, কবিতা আবৃত্তি, নৃত্য পরিবেশন করা হয়।
এতে উল্লেখযোগ্যভাবে গান পরিবশনা করেন কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম জুলহাস, এস,এম আব্দুল লতিফ,জাহাঙ্গীর আলম,রাশিদুল আলম খান এবং শিখা,শিশু শিল্পী মোঃ নিরব খান, নীলাসহ অনেকে, নৃত্য পরিবেশন করেন ইতু পিতু, এছাড়া কবিতা আবৃত্তি করে ইতি রানি সরকার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সম্পন্ন করে সকল সদস্যদের সম্মতিতে কার্যকরী কমিটির গঠনের কাজ সম্পন্ন হয়।
কার্যকরী নতুন কমিটিতে অহবায়ক জাহাঙ্গীর আলম জুলহাসকে পুনরায় সভাপতি এবং মেজর (অবঃ) মোঃ তোজাম্মেল হক তোতা মিয়া সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন সাংগঠনিক সম্পাদক এনায়েত উল্লাহ খােকন,কোষাধ্যক্ষ গোলাম কিবরিয়া জুয়েল, সহ-সভাপতি শাহ আলম, ইমাম হোসেন, হারুন অর রশিদ, সহ-সম্পাদক সাইফুল ইসলাম,মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা নাসরিন আলম। অনুষ্ঠানে আয়োজক কমিটির সকলকে ক্রেস্ট ও সকল সদস্যদের কে পুরস্কৃত করা হয়।
এই আয়োজন শুধু একটি মিলনমেলা নয় এটি হলো সময়কে পেছনে ফেলে ফিরে দেখা সেই সোনালী কৈশোরে, যেখানে বইয়ের পাতা, মাঠের খেলা আর বন্ধুত্বের গল্প আজও হৃদয়ে অমলিন। অনুষ্ঠানে মাঝে মাঝে স্মৃতিচারণ, প্রীতি-আড্ডা, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, এবং প্রাক্তন বন্ধুদের অগণিত হাসিমুখে ছিল ভরা।
প্রগতিশীল এসএসসি-১৯৯২ ব্যাচের বন্ধুদের চাওয়া ছিল একটাই যে, আমরা একদিনের জন্য সবাই ফিরে যাই সেই প্রিয় সময়ে — যখন পৃথিবীটা ছিল শুধু হাসি, গল্প আর বন্ধুত্বে ভরা। এই দিনটিই আমাদের একতার প্রতীক।”