নজরুল ইসলাম জুয়েল (ময়মনসিংহ)
০৯ অক্টোবর, ২০২৫, 6:39 PM
ত্রিশালে অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে বাবা-মাকে হত্যা
ময়মনসিংহের ত্রিশালে অনলাইন জুয়ায় আসক্ত একমাত্র ছেলের হাতে বাবা-মা খুন হয়েছে। বাবা মাকে হত্যার পর ঘরের মেঁঝেতে পুতে রাখে ছেলে। এ ঘটনায় ছেলে রাজুকে গ্রেপ্তার করেছে ত্রিশাল থানা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) বিকালে উপজেলার বৈলর ইউনিয়নের বাসকুরি গ্রামে ঘরের মেঁঝে খুড়ে দু'টি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত কৃষক মোহাম্মদ আলী ও তার স্ত্রী বানুয়ারা বেগম বৈলর ইউনিয়নের বাসকুরি গ্রামে বাসিন্দা। ওই দম্পত্তি তিন মেয়ে ও এক ছেলে। এক মাত্র ছেলের হাতে খুন হয় ওই দম্পত্তি।
পুলিশ ও স্থানীয় মুত্র জানায়, অনলাইন জুয়ায় আসক্ত রাজু গত বুধবার দুপুরে মাকে গলাটিপে হত্যা করে ও রাতে বাবা বাড়িতে ফিরলে কুরাল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে ছেলে রাজু। এরপর গত রাতে শোবার ঘরে বিছানার পাশে মাটিচাপ দেয়।
বৃহস্পতিবার সকালে রাজু নিজেই বাবা মাকে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে বোনদেরকে শশুর বাড়ি থেকে খবর দিয়ে নিয়ে আসে। দুপুরে এলাকাবাসী ও বোনেরা খোজাখোজি করে শোবার ঘরে ডুকলে দেখে নতুন মাটি গর্ত। এতে এলাকাবাসীর সন্দেহ হলে ছেলেকে আটক করে ত্রিশাল থানা পুলিশকে খবর দেয়।
আটকের পর রাজুর দেখানো মতে শোবার ঘরের বিছানার পাশে মাটি খুঁড়ে মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে এলাকা জুড়ে।
স্থানীয়রা জানায়, নিহত মোহাম্মদ আলী স্থানীয় কৃষি কাজ ও মাছ ব্যবসায় জড়িত। তিন মেয়ে এক ছেলে ছিলো তার পরিবারে। ছেলে রাজু অনলাইন জুয়া আসক্ত। মাস খানেক আগে তার স্ত্রী এক মাসের শিশুকে নিয়ে রাজুর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বাবার বাড়ি চলে যায়। ছেলে রাজু অনলাইন জুয়া আসক্ত ছিলো। টাকার জন্যে বিভিন্ন সময় বাবা মাকে অত্যাচার করতেন। ধারণা করা হচ্ছে, অনলাইনে জুয়ার টাকার জন্য বাবা মাকে হত্যা মাটিতে পুতে রাখতে পারে।
ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মুনসুর আহমেদ বলেন, আটক ছেলের সীকারোক্তির ভিত্তিতে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানোে হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে।
ময়মনসিংহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আব্দুল্লাহ আল আমিন বলেন, ঘটনাস্থলে এসে যতটুকু জানতে পেরেছি, রাজু অনলাইন জুয়ায় আসক্ত ছিল। যে কারণে রাজুর স্ত্রী সন্তান তাকে ছেড়ে চলে যায়। আমরা অনলাইন জুয়ার বিষয়ে তৎপর রয়েছি। ইতিমধ্যে আমরা অনলাইন জুয়ায় আসক্ত বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনেছি। অনলাইন জুয়ার বিরুদ্ধে কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।